নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। ইতিমধ্যে সমীক্ষা শুরু করেছে বুয়েটের সড়ক বিশেষজ্ঞ দল। পাবলিক-প্রাইভেট-পার্টনারশিপ (পিপিপি) পদ্ধতিতে প্রস্তাবিত প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করবে জাইকা এবং বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের দোহাজারী সড়ক বিভাগ। তবে প্রস্তাবিত এক্সপ্রেসওয়েটি উড়াল সেতু হবে নাকি মূল সড়কের পাশেই নির্মাণ করা হবে- এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সমীক্ষা প্রতিবেদনের পর। এরপরই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ডিজাইন প্রণয়ন করা হবে।
সওজ দোহাজারী সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দেশের বৃহত্তম মহাসড়ক (এন-১) ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার। নানা কারণে সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে কক্সবাজারের মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল, মহেশখালী পাওয়ার হাব, মাতারবাড়ি পাওয়ার হাব, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন।
তাছাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থানের কারণে কক্সবাজারের বিদেশি কূটনীতিক, দাতা সংস্থা ও পর্যটকদের যাতায়াত বেড়েছে কয়েকগুণ। অন্যদিকে আছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার ও পার্বত্য জেলা বান্দরবান।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৮ উপজেলার বাসিন্দারাও ব্যবহার করে সড়কটি। ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার বাস-ট্রাক-ট্রলি চলাচল করে সড়কটি দিয়ে। কিন্তু ব্যবহারের তুলনায় সড়কটি সরু। তাই অনেক জংশনে যানজট লেগেই থাকে।
সওজ দোহাজারী বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, ‘সড়ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সামশুল হককে প্রকল্পটির কনসালটেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার নেতৃত্বে বুয়েটের একদল প্রকৌশলী প্রকল্পটির সমীক্ষা শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে কয়েকবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনও করেছেন।
এরপরই সড়কটি নিয়ে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতের প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার একটি ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরই মধ্যে সরকার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এক্সপ্রেসওয়ে করার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ফলে চার লেন প্রকল্পটি আর বাস্তবায়নের সম্ভাবনা নেই।’ জানা যায়, প্রকল্পটি হবে জি টু জি (সরকার টু সরকার) পর্যায়ের অর্থায়নে। প্রাথমিকভাবে জাপানি সাহায্য সংস্থা জাইকার ঋণ সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।
এটি হবে টোল রোড। ১৩৯ কিলোমিটার এ এক্সপ্রেসওয়ের পটিয়া বাইপাস, দোহাজারী, কেরানিহাট, লোহাগাড়া ও চকরিয়া অংশে প্রকল্পের মাধ্যমে বিশেষভাবে উন্নয়ন করা হবে। এখানেও জাইকা অর্থায়ন করবে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি অতিব্যস্ত। কিন্তু ১৯৯৫ সালের পর প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া সড়কটির বড় আকারের উন্নয়ন-সম্প্রসারণ করা হয়নি। তবে তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু (শাহ্ আমানত সেতু) প্রকল্পের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে বহদ্দারহাট হতে শাহ্ আমানত সেতু পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার ৬ লেন করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে এবং শাহ্ আমানত সেতুর দক্ষিণে মইজ্জ্যারটেক হতে শিকলবাহা ক্রসিং পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক চার লেনের কাজ শেষ করা হয়।
পাঠকের মতামত: